অন্তর্বতীকালীন সরকারে রংপুর বিভাগীয় কোনো উপদেষ্টা নেই- প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। কারণ, এই বিষয়টা তো আমাদের না, এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার এখতিয়ার।’
রংপুর বিভাগীয় কোনো উপদেষ্টা নেই-প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘উনি (ড. ইউনূস) উনার মেধা, বুদ্ধি, বিচক্ষণতা দিয়ে বিবেচনা করবেন; যদি কোনো সমস্যা থাকে সেটার সমাধান করবেন। আর যদি দেখেন কোথাও কোনো অসামঞ্জস্য হচ্ছে সেটাও তিনি দূর করবেন, আমি এটা প্রধান উপদেষ্টার ওপর ন্যাস্ত করতে চাই।’
এ সময় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে উপদেষ্টা নিয়োগ করার কোনো প্রচলন নাই বলেই জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘এটা প্রধান উপদেষ্টার নিজস্ব এখতিয়ার। তাদের সুবিধার জন্য যাকে যাকে নেওয়ার দরকার তাকে নেবে।’
সবাইকে সহিষ্ণু থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জাতীয় হিসেবে আমাদের অসহিষ্ণু হলে চলবে না, সহিষ্ণু হতে হবে। এত বড় ১৭ বছরের একটা জঞ্জাল একটা গার্বেজ তৈরি করা হয়েছে এটাকে সরাতে ১৭ দিনে সম্ভব না, ১৭ মাসেও সম্ভব না, এটাই সত্য। এজন্য যারা আছেন অন্তর্বতী সরকারে তাদেরকে সময় দিতে হবে। তাদের প্রধান যে দায়িত্ব সেটা আমরা বারবার করে বলেছি- সবগুলো সংস্কারে হাত দেওয়ার খুব বেশি প্রয়োজন নেই বলে মনে করি। নির্বাচিত যে পার্লামেন্ট আসবে সেই সংস্কারের কাজগুলো করবে।’
‘এই অন্তর্বতী সরকারের মূল দায়িত্ব হবে- নির্বাচনের জন্য একটি লেভেলপেইন্ট ফিল্ড তৈরি করা; সকলে যেন ভোট দিতে পারে এবং সকলে যাতে অংশগ্রহণ করতে পারে তার জন্য কাজ করা।নিরপেক্ষ লোকজনকে নির্বাচনের জায়গাগুলোতে বসানো; বিচার বিভাগকে নিরপেক্ষ করা, প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করা; নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার জন্য এগুলোই প্রধান কাজ’, যোগ করেনবিএনপি মহাসচিব।
সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা রিজেক্ট করেছি, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচন সম্ভব না। ’
জাতীয় ঐক্যবদ্ধ করার জন্য বিএনপির বার্তা কী- এই প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই জাতিকে রক্ষা করতে হলে সবচেয়ে বেশি যেটা প্রয়োজন সেটা হলো ঐক্য; ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকার তারা যে কাজটা খুব সফলভাবে করেছে সেটা হলো- জাতিকে বিভক্ত করে ফেলেছে। এই বিভক্তিটা দূর করে আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই। মতামত ভিন্ন থাকতে পারে একটা গণতান্ত্রিক সমাজে, ব্যবস্থায় একেক জন একেক রাজনৈতিক মত থাকবে; কিন্তু ঐক্যটা থাকবে কতগুলো মৌলিক বিষয়ে, একটা হলো- বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বার্বভৌমত্বের বিষয়ে, আরেকটা হচ্ছে গণতন্ত্রের বিষয়ে, দেশের মানুষের অধিকারের বিষয়ে, এগুলো হচ্ছে মৌলিক বিষয় এখানে ঐক্য থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই ঐক্যের বিষয়ে আমরা চেষ্টা করে সফলও হয়েছি। চূড়ান্ত পর্যায়ে আমরা ৬৩টি রাজনৈতিক দল যুগপথ আন্দোলন করেছি; ডান-বাম মধ্য সবগুলোকে একত্রে নিয়ে; সেদিক থেকে আমরা বলব অনেকটা কাজ হয়েছে। চূড়ান্ত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জন হয়েছে।’
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফসহ জেলা ও উপজেলা বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।